তেলাপোকা বা আরশোলা হল ব্লাটোডা পর্বের পোকা, যাতে উই পোকারাও আছে। মানুষের বাসস্থানের সাথে সম্পর্কিত আছে এমন তেলাপোকার প্রজাতি রয়েছে ৪৬০০ প্রজাতির মধ্যে প্রায় ৩০টি।[১][২] প্রায় চারটি প্রজাতিকে ক্ষতিকর হিসেবে ধরা হয়।
তেলাপোকা এক ধরনের ক্ষতিকর পোকা। যাবতীয় ময়লা আবর্জনা ও অন্ধকারে বাস, সহজে অভিযোজন করতে পারে বলে এরা পাঁচ কোটিরও বেশি বছর যাবৎ টিকে আছে।
তেলাপোকা দূর করার উপায়
তেলাপোকারা বহু পুরনো দলভুক্ত পোকা, এদের প্রায় ৩২০ মিলিয়ন বছর পুরনো কার্বনিফেরাস যুগেও পাওয়া গিয়েছিল। তেলাপোকার পূর্বপুরুষদের মধ্যে বর্তমান তেলাপোকায় বিদ্যমান অভ্যন্তরিন ovipositor ছিল না। তেলাপোকা হল কিছু অংশে সাধারণ পোকার মতই যাদের বিশেষ চোষ্য মুখাংশ (এফিড বা অন্য সত্যিকার পোকার যেমন থাকে) নেই; বরং তাদের আছে চর্বন মুখাংশ যা প্রাচীন নিওপ্টিরান পোকার মত। এদের যততত্র দেখা যায় এবং তারা খুব কঠিন ধরনের পোকা। এরা যে কোন পরিবেশে টিকতে পারে যেমন মেরু অঞ্চলের ঠান্ডা থেকে শুরু করে ট্রপিকালের তীব্র উষ্ণ পরিবেশ। উষ্ণ অঞ্চলের তেলাপোকারা নাতিশীতোষ্ণ অঞ্চলের চেয়ে আকারে বড় হয়।
তেলাপোকার সব থেকে পরিচিত প্রজাতি হল Periplaneta americana,[তথ্যসূত্র প্রয়োজন] যেটি প্রায় ৩ সে.মি. লম্বা, জার্মান তেলাপোকা, Blattella germanica প্রায় ১.৫ সেণ্টিমিটার লম্বা, এশিয়ান তেলাপোকাও দেড় সেমি লম্বা। বিলুপ্ত তেলাপোকা Carboniferous Archimylacris ও Permian Apthoroblattina এর থেকে কয়েকগুণ বড় ছিল।[তথ্যসূত্র প্রয়োজন] তেলাপোকাকে তাদের বিরক্তিকর স্বভাবের জন্য পেস্ট/ক্ষতিকর হিসেবে গণ্য করা হয়।
কিছু প্রজাতি যেমন জার্মান গ্রেগারিয়াস তেলাপোকার বিস্তৃত সামাজিক গঠন রয়েছে যার মধ্যে রয়েছে একই বাসস্থান ব্যবহার, সামাজিক নির্ভরতা, তথ্য স্থানান্তর এবং আত্মীয় চিনতে পারা ইত্যাদি। মানব সংস্কৃতিতে তেলাপোকার অস্তিত্ব অনেক পুরনো। সারা পৃথিবীতে তাদেরকে নোংরা ক্ষতিকর প্রাণী হিসেবে দেখা হয়, যদিও বেশিরভাগ প্রজাতিই অহিংস এবং সারা পৃথিবীর বিভিন্ন পরিবেশে এদের বাস করতে দেখা যায়। দক্ষিণ আমেরিকার ইকুয়্যাদর দেশে আরশোলা বা তেলাপোকা কে দিয়ে দৌড়বাজি করানো হয়, এবং এটি এক ধরনের মনোরঞ্জক খেলা, native American দের জন্য। এর জন্য ইকুয়াদর্ কে Arthoproda দের স্বর্গরাজ্য বলে।
বিচ্ছিরি নোংরা এই পোকা ঘর থেকে দূরে রাখা যায় সহজ কিছু পন্থায়
তেলাপোকার উপদ্রব সহ্য করতে হয়নি এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া যাবে না। সাধারণত, বাড়িঘর ময়লা থাকলে সেখানে তেলাপোকা বাসা বাঁধে। তাই ঘর পরিষ্কার রাখার পাশাপাশি তেলাপোকার দূর করার অন্যান্য পন্থা সম্পর্কেও সচেতন থাকা প্রয়োজন।
গৃহস্থালী-বিষয়ক একটি ওয়েবসাইটে প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে ঘর থেকে তেলাপোকা দূর করার কয়েকটি উপায় সম্পর্কে জানান হল।
ঘরবাড়ি পরিষ্কার রাখা: তেলাপোকার যন্ত্রণা থেকে বাঁচতে এর বিকল্প নেই। তেলাপোকা খাবার ও ময়লা স্থান পছন্দ করে এবং সেখানেই বাসা বাঁধে। নিয়মিত বাড়ি-ঘর পরিষ্কার করা হলে তেলাপোকা বাসা বাঁধতে পারেনা।
চুলের স্প্রে ব্যবহার: তেলাপোকার ওপর চুলের স্প্রে দিয়ে স্প্রে করলে তা আর নড়তে পারে এবং একটা পর্যায়ে দুর্বল হয়ে যায় তখন তা সরিয়ে বা মেরে ফেলতে পারেন।
তেজ পাতা: তেলাপোকা তেজ পাতার গন্ধ সহ্য করতে পারেনা। তাই তেজপাতা গুঁড়া করে তা ঘরের আনাচে কানাচে ছড়িয়ে রাখুন। আর তেলাপোকা কোথায় বাসা বেঁধেছে তা জেনে থাকলে সেখানেই ছিটিয়ে দিন। এর গন্ধে তারা সেস্থান ত্যাগ করবে।
অ্যামোনিয়া: যদিও এর গন্ধটা খুব একটা ভালো না তবুও তেলাপোকার উপদ্রপ থেকে বাঁচতে রান্নাঘরের আনাচেকানাচে অ্যামোনিয়া দিয়ে পরিষ্কার করুন।
এক বালতি পানিতে দুই কাপ অ্যামনিয়া মিশিয়ে তা দিয়ে ঘর পরিষ্কার করে নিন।
আঠার ব্যবহার: এই পদ্ধতি খুব সহজ ও কার্যকর। উন্নত মানের আঠা যেমন- ডাক টেপ ঘরের বিভিন্ন স্থানে আঠালো অংশ উপরিভাগে দিয়ে রেখে দিন। এর উপর দিয়ে চলাচল করতে গিয়ে তেলাপোকা আটকে যাবে।