সার্বিক সৌন্দর্য বৃদ্ধিতে ত্বকের যেমন একটা বিশেষ ভূমিকা রয়েছে, তেমনি চুলের সৌন্দর্যকেও উপেক্ষা করা সম্ভব নয়। তাই তো অপূর্ব সুন্দরি হয়ে উঠতে ত্বকের পাশাপাশি চুলের যত্ন(Hair care) নেওয়াটাও একান্ত প্রয়োজন। আর এই কাজটি বাড়িতে বসেই কীভাবে করবেন, তারই সন্ধান দিতে চলেছে এই প্রবন্ধ। আসলে এই লেখায় এমন কিছু ঘরোয়া উপাদান সম্পর্কে আলোচনা করা হল, যাদেরকে নিয়মিত কাজে লাগালে স্কাল্পের স্বাস্থ্যের এত মাত্রায় উন্নতি ঘটে যে চুলের সৌন্দর্য বৃদ্ধি পেতে সময় লাগে না। আর এমনটা হয় একেবারে এক সপ্তাহের মধ্যেই। এই কারণেই তো এই প্রবন্ধটি পড়ে ফেলা সবারই একান্ত প্রয়োজন।
১. অ্যালো ভেরা জেল:
একেবারে ঠিক শুনেছেন! ত্বকের সৌন্দর্য বাড়ানোর পাশাপাশি চুলের সৈন্দর্য বাড়াতেও এই প্রকৃতিক উপাদানটি বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। আসলে অ্যালো ভেরা জেলে উপস্থিত একাধিক উপকারি এনজাইম, চুলের অন্দরে প্রবেশ করে একদিকে হেয়ার গ্রোথকে ত্বরান্বিত করে। সেই সঙ্গে হেয়ার ড্যামেজের চিকিৎসাতেও বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। শুধু তাই নয়, হেয়ার ফলিকেলের স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটায়। ফলে চুল(Hair) সিল্কি এবং সুন্দর হয়ে উঠতে সময় লাগে না। এখন প্রশ্ন হল, চুলের যত্নে কীভাবে কাজে লাগাতে হবে অ্যালো ভেলা জেলকে? এক্ষেত্রে ২ চামচ অ্যালো ভেরা জেল(Aloe Vera Gel) নিয়ে তার সঙ্গে ২ চামচ জল মিশিয়ে ভাল করে মিশিয়ে নিতে হবে। তারপর মিশ্রনটি একটা স্প্রে বটলে নিয়ে চুলে ভাল করে স্প্রে করতে হবে। এইভাবে লপ্তাহে ৩-৪ দিন চুলের পরিচর্যা করলেই দেখবেন উপকার মিলতে শুরু করেছে।
২. অলিভ অয়েল অথবা নারকেল তেল:
চুলের সৈন্দর্য বাড়াতে এই ঘরোয়া টোটকাটির কোনও বিকল্প হয় না বললেই চলে। আসলে অলিভ অয়েল এবং নারকেল তেলের অন্দরে থাকা একাধিক উপকারি উপাদান হেয়ার ফলিকেলের অন্দরে পুষ্টির ঘাটতি দূর করে। সেই সঙ্গে চুলের স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটায় ফয়ে হেয়ার গ্রোথ যেমন সুন্দর ভাবে হতে থাকে, তেমনি সার্বিকভাবে চুলের স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটতেও সময় লাগে না। প্রসঙ্গত, অলিভ অয়েল এবং নারকেলে তেলের অন্দরে উপস্থিত অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, ফ্য়াটি অ্যাসিড এবং আরও সব উপকারি উপাদান এক্ষেত্রে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। প্রসঙ্গত, এক্ষেত্রে ২-৩ চামচ নারকেল তেল বা অলিভ অয়েল(Olive oil) নিয়ে তা গরম করে নিতে হবে। তারপর হলকা গরম করে নেওয়া তেলটি স্কাল্পে লাগিয়ে কম করে ১৫ মিনিট ভাল করে মাসাজ করতে হবে। এরপর ৩০ মিনিট অপেক্ষা করার পর ধুয়ে ফেলতে হবে চুলটা।
৩. দই:
অল্প সময়ে চুলের সৌন্দর্য বাড়াতে চান নাকি? তাহলে ১ কাপ দইয়ের সঙ্গে ২ চামচ আমলা পাউডার(Amla powder) মিশিয়ে নিন। তরপর দুটি উপাদান ভাল করে মিশিয়ে নিয়ে মিশ্রনটি স্কাল্পে এবং চুলে ভাল করে লাগান। এরপর ৩০ মিনিট অপেক্ষা করে ধুয়ে ফেলুন চুলটা। প্রসঙ্গত, সপ্তাহে ১-২ বার এই ঘরোয়া টোটকাটিকে কাজে লাগালে স্কাল্পের অন্দরে ভিটামিন ডি এবং বি৫-এর মাত্রা বাড়তে শুরু করবে, যার প্রভাবে চুল(Hair) সুন্দর হয়ে উঠতে দেখবেন সময় লাগবে না।
৪. ডিম:
হেয়ার ফলিকেলের অন্দরে পুষ্টির ঘাটতি দূর করার মধ্যে দিয়ে চুলের সৌন্দর্য বৃদ্ধি করতে ডিম দারুনভাবে কাজে আসে। আসলে এর অন্দরে উপস্থিত প্রোটিন এবং অন্যান্য আরও সব উপকারি উপাদান এক্ষেত্রে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। তাই তো চুলের পরিচর্যায় ডিমকে কাজে লাগানোর পরামর্শ দিয়ে থাকেন ডার্মাটোলজিস্টরা। এক্ষেত্রে ১ টা ডিমের কুসুমের সঙ্গে ১ চামচ অলিভ অয়েল এবং ১ চামচ মধু(Honey) মিশিয়ে একটা পেস্ট বানিয়ে নিতে হবে। তারপর সেটি ভাল করে চুলে লাগিয়ে কম করে ৩০ মিনিট অপেক্ষা করতে হব। সময় হয়ে গেলে ভাল করে ধুয়ে ফেলতে হবে চুলটা। এইভাবে সপ্তাহে ১-২ বার চুলের খেয়াল রাখলেই দেখবেন সিল্কি এবং প্রাণবন্ত চুলের অধিকারি হয়ে উঠতে সময় লাগবে না।
৫. পেঁয়াজের রস:
চুলকে সুন্দর এবং উজ্জ্বল করে তুলতে বাস্তবিকই পেঁয়াজের রসের(Onion juice) কোনও বিকল্প হয় না বললেই চলে। তাই তো অল্প সময়ে চুলকে সুন্দর করে তুলতে চাইলে পেঁয়াজের রসকে কাজে লাগাতে ভুলবেন না যেন! এক্ষেত্রে পরিমাণ মতো পেঁয়াজের রসের সঙ্গে ৩-৪ ড্রপ ল্যাভেন্ডার তেল মিশিয়ে তা ভাল করে চুলে লাগাতে হবে। তারপর ১৫ মিনিট অপেক্ষা করে ধুয়ে ফেলতে হবে চুলটা। প্রসঙ্গত, সপ্তাহে ২ বার এই ঘরোয়া টোটকাটিকে কাজে লাগালে দেখবেন চুল(Hair) সুন্দর হয়ে উঠতে শুরু করেছে।
৬. অ্যাপেল সিডার ভিনিগার:
১ চামচ অ্যাপেল সিডার ভিনগার(Apple cider vinegar), ১ কাপ ঠান্ডা জলে মিশিয়ে তা দিয়ে ভাল করে চুলটা ধুতে হবে। এইভাবে সপ্তাহে একবার চুলের পরিচর্যা করলে দেখবেন সিল্কি চুলের অধিকারি হয়ে উঠতে সময় লাগবে না।