রাতে চুল এবং ত্বকের যত্নে করুন এই ছোট কাজ গুলো

আমাদের দেশের মেয়েদের বড় সমস্যা হচ্ছে আমরা পড়াশোনা, চাকরি(Job), বিয়ে, ক্যারিয়ার, সংসার, বাচ্চা সবকিছুর পেছনে সময় দিতে দিতে নিজেকে আলাদা করে সময় দেয়ার কথা ভুলে যাই। কিন্তু আপনি যদি নিজেকে না ভালোবাসেন, তাহলে কে ভালবাসবে বলুন তো? এখনকার ব্যস্ত জীবনে নিজের জন্য আলাদা করে বের করার মতো সময় কিন্তু অনেকের কাছেই নেই। তবুও দিনের শেষে ক্লান্ত হয়ে বাসায় ফেরার পর কিন্তু নিজের জন্য একটুখানি আলাদা সময় বের করা দরকার। নাহলে এই সামান্য যত্নটুকুর অভাবেই কিন্তু আপনি আস্তে আস্তে অকালেই বয়সের ছাপ(Age impression) ডেকে নিয়ে আসবেন। আর সেটা নিশ্চয়ই আমরা কেউই চাই না, তাই না? চলুন তাহলে দেখে নিই, ৭টি সহজ ধাপে কীভাবে আপনি আপনার নাইট টাইম স্কিন অ্যান্ড হেয়ারকেয়ার সেরে ফেলতে পারেন –

চুলের জট ছাড়ানো এবং আঁচড়ানো
আমরা কিন্তু অনেকেই এই কাজটা আলসেমি করে করি না, তাই না? দেখা যায় বাইরে যাবার সময় আমরা অনেক সময় নিয়ে আস্তে আস্তে চুল(Hair) আঁচড়ানো, নানারকম হেয়ার স্টাইলিং করি। কিন্তু ঘুমোতে যাবার আগেই যত অনীহা আর আলসেমি। কিন্তু ঘুমানোর আগে চুল আঁচড়ানো খুবই জরুরী। এতে মাথার স্ক্যাল্পে ভালোভাবে রক্ত সঞ্চালন হয়। ফলে চুল পড়ার হার কমে এবং নতুন চুল গজায়।

আরো পড়ুন  চুলের আগা ফাটা রোধ করার ঘরোয়া উপায়

চুলে তেল লাগানো (অপশনাল)
আপনার যদি পরদিন খুব সকাল করে কোথাও যাবার তাড়া না থাকে তাহলে অবশ্যই মাথায় তেল লাগান। চুলের সুপারফুডই হচ্ছে তেল। খুব দামী কিছুর কিন্তু এখানেও প্রয়োজন নেই। সবচেয়ে সহজলভ্য অপশন টা এখানেও ব্যবহার করুন। নারকেল তেল! সাথে বড়জোর সামান্য একটু ক্যাস্টর অয়েল লাগাতে পারেন। আপনার চুল পরদিন শ্যাম্পু(Shampoo) করার পর সিল্কি আর শাইনি দেখাবে।

চুল বাঁধা
এখানেও কিন্তু আমরা আলসেমি করি। অনেকেই চুল(Hair) বাঁধি না, আবার অনেকে ভয়াবহ টাইট করে বেঁধে চুলের উপকারের জায়গায় ক্ষতি করে বসি। সবচেয়ে সহজ উপায় হল হালকা করে বেণী করে ফেলুন, অথবা পরপর বেশ কয়েকটা রাবার-ব্যান্ড দিয়ে হালকা করে চুল আঁটকে রাখুন। আর চুলের আগা ফাটা রোধ করতে চুলের আগাটুকু এক টুকরো সিল্কের কাপড়ে মুড়িয়ে রাবার-ব্যান্ড দিয়ে আঁটকে ফেলুন।

ব্যস! হয়ে গেলো রাতের বেলার স্কিন আর হেয়ার কেয়ার। একটু কষ্ট করে প্রতিদিন নিয়ম করে এই জিনিসগুলো করার অভ্যাস করে ফেলুন। আপনি নিজেই দেখবেন আপনার স্কিন আর চুলের কতটুকু ভেতর থেকে উন্নতি হয়েছে। একটা হেলদি স্কিন আর চুল না থাকলে কিন্তু মেকআপ(Makeup) আর হেয়ারস্টাইলও আপনার অ্যাপিয়ারেন্স বাঁচাতে পারবে না। কাজেই নিজের জন্য সময় বের করতে হবে। অন্য কাউকে না, বরং নিজেকে খুশি করার জন্যেই, তাই না?

মেক আপ রিমুভিং
অনেকেই আলসেমি করে এ কাজটা ঠিক মতো করতে চান না। কিন্তু সঠিকভাবে মেকআপ(Makeup) রিমুভ না করলে আপনি ঘুমিয়ে থাকা অবস্থায় আপনার স্কিনের যে কতটা ক্ষতি হবে আপনি কিন্তু জানেন না। অনেকেই ভাবেন মেকআপ নিয়ে এক আধ দিন ঘুমোলে কি আর হবে! কিন্তু আপনার এই মেকআপের রেসিডিউ আপনার স্কিনকে লং রানে রুক্ষ, শুষ্ক, ড্যামেজড আর নির্জীব করে তুলবে। খুব কম খরচে এবং খুব অল্প সময়ে কিন্তু আপনি মেকআপ রিমুভ করতে পারেন। পরিষ্কার কটনপ্যাড/তুলোর বল/ফেসিয়াল টিস্যুতে একটুখানি নারকেল তেল(Coconut oil) নিয়ে আস্তে আস্তে পুরো মুখের মেকআপ তুলে নিন। যারা মেকআপ করেন না, কিন্তু সাধারণ ময়েশ্চারাইজার, সানস্ক্রিন আর বেবি পাউডার ব্যবহার করেন তারাও এ পদ্ধতিতে মুখটা সুন্দর করে পরিষ্কার করে নিতে পারেন। জোরে ঘষাঘষি একদমই করবেন না। নারকেল তেল খুবই স্কিন ফ্রেন্ডলি এবং বাজেট ফ্রেন্ডলি একটা জিনিস। স্কিনের কোন প্রকার ক্ষতি না করে নিরাপদে সব মেকআপ তুলে ফেলতে সক্ষম এটি।

ফেইসওয়াশ দিয়ে মুখ ধোয়া / ক্লেঞ্জিং
এবার আপনার পছন্দের এবং স্কিন টাইপ আর বাজেট অনুযায়ী কোন ভালো মানের ফেইসওয়াশ দিয়ে মুখ ধুয়ে নিন। চাইলে ফেইসওয়াশের পরিবর্তে বেসন ও ব্যবহার করতে পারেন। আমি যেটা করি সেটা হলো রান্নাঘর থেকে অল্প বেসন নিয়ে এসে সামান্য পানি দিয়ে পেস্টের মতো বানিয়ে সার্কুলার মোশনে পুরো মুখে ম্যাসাজ করে ঠাণ্ডা পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলি।

আরো পড়ুন  চুল সিল্কি ও শাইনি করতে পেঁপের হেয়ার প্যাক

টোনিং
এটি খুব গুরুত্বপূর্ণ একটি ধাপ যেটা আমরা প্রায়ই ভুলে যাই, বা এড়িয়ে যাই। মার্কেটে অনেক রকমের টোনার কিনতে পাওয়া যায়। আপনার বাজেট এবং স্কিন টাইপ অনুযায়ী কিনে নিতে পারেন। অথবা সমপরিমাণ পানি আর অ্যাপল সাইডার ভিনেগার(Apple Sider Vinegar) মিক্স করে সেটায় একটি কটনপ্যাড/তুলোর বল/ফেসিয়াল টিস্যু ভিজিয়ে তা দিয়ে পুরো মুখ মুছে নিয়ে মিনিট পাঁচেক অপেক্ষা করুন। এটি আপনার ত্বকের খোলা রোমকূপগুলো বন্ধ হতে সাহায্য করবে।

ময়েশ্চারাইজিং
আপনার ত্বক শুষ্ক, স্বাভাবিক অথবা তৈলাক্ত যেমনই হোক না কেন, তার জন্য ময়েশ্চারাইজিং কিন্তু জরুরী। মার্কেটের ময়েশ্চারাইজার না কিনতে চাইলে বাসায় বসে খুব সহজ কিছু উপাদান দিয়ে ময়েশ্চারাইজার বানিয়ে ফেলতে পারেন। শুষ্ক ত্বকের জন্য কয়েক ফোঁটা নারকেল তেল, আর সাথে বড়জোর একটু আরগান অয়েল অথবা সুইট আমন্ড অয়েল দিলেই চলে। আর যদি আপনার স্কিন অয়েলি হয় তাহলে নিশ্চিন্তে অল্প একটু অ্যালোভেরা জেল(Aloe vera jail) মেখে ফেলতে পারেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published.