স্বাভাবিকভাবে শিশু জন্ম দেওয়ার চেয়ে সিজারের মাধ্যমে শিশু জন্ম দেওয়ার প্রতি এখন আমরা অনেকেই ঝুঁকে যাচ্ছি।
এছাড়া অনেকেই মনেও করে থাকি যে, সিজারিয়ান শিশুর জন্ম ঝুঁকি কম থাকে এবং তুলনামূলক সুস্থ শিশু জন্ম দিতে পারি।
সিজারের পর বাচ্চার যত্ন কিভাবে নিবেন?
কিন্তু এই ধারণাকে চ্যালেঞ্জ করে সম্প্রতি একেটি গবেষণা প্রমাণ করেছে যে, সিজারিয়ান শিশু স্বাভাবিকভাবে জন্মগ্রহণ করা শিশুদের তুলনায় স্বাস্থ্যগত সমস্যায় বেশি ভোগে।
এই গবেষণায় দেখা গেছে, সিজারিয়ানের জন্ম নেওয়া অপরিণত শিশুদের জন্মে কোন উল্লেখযোগ্য সাহায্য করে না। উপরন্তু তাদের নিঃশ্বাসজনিত সমস্যার কারণ ঘটায়।
গবেষণাটিতে আরও দেখা যায় যে, সিজারিয়ান পদ্ধতিতে জন্ম নেয়া অপরিণত শিশুদের শ্বাসপ্রশ্বাসের সমস্যা তুলনামূলক বেশি হয় স্বাভাবিকভাবে জন্ম নেয়া শিশুদের চাইতে।
ডায়েমস এর ডেপুটি চিকিৎসা পরিচালক ডায়ান অ্যাস্টন তার গবেষণা কাজটির মাধ্যমে প্রচলিত সিজারিয়ান পদ্ধতি সম্পর্কে সকলের ধারণা পাল্টে দিয়েছেন।
তিনি বলেন, যদিও অনেক ক্ষেত্রেই সিজার করা শিশু বা মায়ের স্বাস্থ্যের জন্য প্রয়োজন, কিন্তু এই গবেষণা প্রমাণ করেছে যে সব ক্ষেত্রে শিশুদের জন্য অপারেশন লাভজনক নাও হতে পারে। কারণ শিশুর মায়ের গর্ভে স্বাভাবিকভাবে পরিপক্ক হতে ৩৯ সপ্তাহ প্রয়োজন হয়।
আপনার নবজাতকের সাথে প্রথম কয়েক মাস প্রথমবার পিতামাতা হওয়া মানুষদের জন্য বিশৃঙ্খল এবং অভিভূতকারী হতে পারে। আপনি নবজাতক শিশুর যত্ন সম্পর্কে সবার কাছ থেকে সব ধরণের পরস্পর বিরোধী পরামর্শ পাবেন। নবজাতকের যত্ন সম্পর্কে কোন পরামর্শ অনুসরণ করতে হবে তা নির্ধারণ করা বিভ্রান্তিকর হতে পারে। নবজাতকের যত্ন নেওয়া ক্লান্তিকর এবং চ্যালেঞ্জিং, তবে এটি আপনার জীবনের সবচেয়ে বিস্ময়কর এবং ফলপ্রসূ অভিজ্ঞতাও।
জন্মের পরপর সদ্যজাত শিশুর যত্ন
নবজাতক শিশুকে মায়ের দুধ খাওয়ানো
* নবজাতককে গরম রাখা
* নবজাতকের গোসল
* নাভির যত্ন
* চুল কাটা
* চোখের যত্ন
* ত্বকের যত্ন
* সময়মতো টিকা দেওয়া
* নবজাতকের খারাপ লক্ষণ বা বিপদচিহ্ন খেয়াল করা।
নবজাতককে মুছুন
* পরিষ্কার এক টুকরা বড় কাপড়ের ওপর শিশুকে নিন।
* কাপড় দিয়ে নবজাতকের সারা শরীর জড়িয়ে ফেলুন।
* কাপড় দিয়ে নবজাতকের মাথা ভালোভাবে মুছুন।
* এরপর নবজাতকের গলা, ঘাড় ও কাঁধ ভালোভাবে মুছুন।
* এভাবে বুক, পেট ও হাত ভালোভাবে মুছুন।
* এরপর নবজাতকের পিঠ ভালোভাবে মুছুন।
* নবজাতকের কোমর থেকে পায়ের তালু পর্যন্ত ভালোভাবে মুছুন।
* একই নিয়মে মাথা থেকে পা পর্যন্ত আরো কয়েকবার মুছুন।
* মোছা শেষে কাপড়টি ফেলে দিন।
নবজাতককে মোড়ানো
* মোড়ানোর জন্য শুকনো ও পরিষ্কার এক টুকরো বড় সুতি কাপড়ের ওপর নবজাতককে নিন।
* লক্ষ রাখুন, যাতে কাপড়ের কিছু অংশ নবজাতকের মাথার ওপরের দিকে ও কিছু অংশ পায়ের নিচের দিকে বাড়তি থাকে।
* প্রথমে মাথার ওপরের দিকের কাপড়ের বাড়তি অংশ দিয়ে নবজাতকের মাথা কপাল পর্যন্ত ঢেকে নিন। কাপড়ের ওপরের দুই কোনা নবজাতকের দুই কাঁধের ওপর এসে কাঁধ ঢেকে দেবে।
* এবার পায়ের দিকের কাপড়ের বাড়তি অংশ দিয়ে নবজাতকের পা ঢেকে দিন।
* এবার নবজাতকের শরীরের দুই পাশের বাড়তি কাপড় দিয়ে বুক ও পেট ভালোভাবে ঢেকে দিন।
* পুরোপুরি মোড়ানোর পর শিশুকে গরম রাখার জন্য মায়ের বুকে দিতে হবে।
* এরপর শালদুধ খাওয়াতে সহায়তা করুন।
যে সব সমস্যা হতে পারে
* জন্মের পরপর শ্বাস না নেওয়া
* জন্মের পর না কাঁদা
* খিঁচুনি হওয়া
* অজ্ঞান হয়ে যাওয়া
* শ্বাস নিতে বা ছাড়তে কষ্ট হওয়া
* শরীরের তাপ বেড়ে যাওয়া
* শরীর ঠাণ্ডা হয়ে যাওয়া
* শরীর হলুদ রঙের হয়ে যাওয়া
* নাভি লাল, নাভিতে দুর্গন্ধ বা পুঁজ থাকা
* চামড়ায় ঘা, ফোসকা বা পুঁজসহ বড় দানা-লাল ও ফোলা থাকলে
* অনবরত বমি
* নেতিয়ে পড়লে বা স্বাভাবিকের চেয়ে কম নড়াচড়া করলে
* দুর্বল, অনিয়মিত কাঁদা বা কাঁদতে না পারলে।
শ্বাস না নিলে যা করবেন
* পরিষ্কার নরম কাপড় বা তোয়ালে দিয়ে শিশুর সম্পূর্ণ শরীর আরো ভালো করে মুছুন।
* নাকে ও মুখে কালচে সবুজ পায়খানা লেগে থাকলে তা আঙুলে কাপড় পেঁচিয়ে পরিষ্কার করুন।
* শিশুকে কাত করে পিঠে শিরদাঁড়া বরাবর নিচ থেকে ওপর দিকে বারবার হাতের তালুর নিচের অংশ দিয়ে ঘষুন।
* শিশুর রং এবং শ্বাসের দিকে লক্ষ করুন। যদি ঠোঁট, জিহবা ও মুখের রং গোলাপি হয় এবং নিয়মিত শ্বাস নিতে থাকে, তাহলে শিশুকে মায়ের বুকের দিতে হবে।
শ্বাস না নিলে যা করবেন না
* পা ওপরে ধরে উল্টো করে নবজাতককে ঝোলানো
* থাপড় দেওয়া
* শরীরে ঠাণ্ডা পানি ছিটানো
* কানে অথবা নাকে ফুঁ বা বাতাস দেওয়া
* পানিতে চুবানো
* বুকের খাঁচায় চাপ দেওয়া
* বাচ্চাকে পর্যায়ক্রমে গরম ও ঠাণ্ডা পানিতে চুবানো
* গর্ভফুলকে গরম করা
* গর্ভফুলের অপেক্ষায় নবজাতককে ফেলে রাখা
* মুখে ফুঁ দেওয়া
* কানে ফুঁ দেওয়া
* মধু ও চিনির পানি খাওয়ানো।
নবজাতক শিশুর যত্ন নেওয়ার কৌশল
এটি আপনার প্রথমবার হলে, একটি নবজাতকের যত্ন নেওয়া স্পষ্টতই একটি চ্যালেঞ্জ। সুতরাং, এখানে দশটি উপায় রয়েছে যা আপনাকে নবজাতকের যত্ন নিতে সহায়তা করবে:
1. খাওয়ানো
শিশুকে সঠিক সময়ে খাওয়ানো খুব গুরুত্বপূর্ণ। নবজাতককে প্রতি 2 থেকে 3 ঘণ্টায় খাওয়ানো উচিত, যার অর্থ 24 ঘণ্টার মধ্যে আপনাকে 8-12 বার দুধ খাওয়াতে নিতে হবে। শিশুর জীবনের প্রথম 6 মাসে, শিশুকে শুধুমাত্র বুকের দুধ খাওয়ানো উচিত। স্তনের দুধের মধ্যে অত্যাবশ্যক পুষ্টি এবং অ্যান্টিবডি রয়েছে যা শিশুর বেঁচে থাকা এবং বৃদ্ধির জন্য প্রয়োজনীয়। কমপক্ষে 10 মিনিট ধরে শিশুকে বুকের দুধ খাওয়ান। আপনার শিশুর ঠোঁটের কাছে স্তনটি ধরে রাখুন যতক্ষণ পর্যন্ত না সে দৃঢ়ভাবে সেটির সাথে সংযুক্ত হয় এবং চোষা শুরু করে। শিশুর সঠিকভাবে স্তনের সাথে সংযুক্ত হলে, মা তার স্তনে কোনো ব্যথা অনুভব করবে না। শিশুর খাওয়া শেষ হলে স্তনটি কম পূর্ণ বোধ করা উচিত। এই একটি ইঙ্গিত যে শিশু যথেষ্ট দুধ পাচ্ছে। স্তনের দুধ যদি না খাওয়ান, তবে শিশুকে ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে একটি ফরমূলা খাওয়ান। প্রতিবার খাওয়ানোতে বাচ্চাকে 60 থেকে 90 মিলিলিটার ফরমূলা খাওয়াতে হবে।
2. ঢেঁকুর তোলা
বাচ্চাকে খাওয়ানো হয়ে গেলে, তাকে ঢেঁকুর তোলাতে হবে। বাচ্চারা খাওয়ানোর সময় বায়ু গিলে ফেলে, যা তাদের পেটে গ্যাস এবং শূলবেদনা ঘটায়। ঢেঁকুর এই অতিরিক্ত বায়ু বের করে দেয়, এইভাবে পাচনে সাহায্য করে এবং উগরে দেওয়া ও পেট ব্যথা আটকায়। শিশুটিকে আস্তে আস্তে আপনার বুকের কাছে এক হাত দিয়ে ধরে রাখুন। তার চিবুক আপনার কাঁধে এলিয়ে দিন। আপনার অন্য হাত দিয়ে খুব আস্তে আস্তে তার পিঠে টোকা দিন বা চাপড়াতে থাকুন যতক্ষণ না সে ঢেঁকুর তোলে।
3. কিভাবে আপনার নবজাতককে ধরতে হবে
এটা নিশ্চিত করা খুব গুরুত্বপূর্ণ যে তাকে ধরে রাখার সময় আপনি তার মাথা এবং ঘাড়কে আপনার এক হাত দিয়ে অবলম্বন দেবেন। এর কারণ হল তার ঘাড়ের পেশী এতটা শক্তিশালী নয় যে মাথাকে কোনো অবলম্বন ছাড়াই ধরে রাখতে পারবে। মেরুদন্ড এখনও বাড়ছে এবং শক্তিশালী হয়ে উঠছে। 3 মাস বয়স হলে তবেই ঘাড়টি নিজে নিজে মাথাকে অবলম্বন দিতে পারবে। সুতরাং নবজাতক শিশুর যত্ন নেওয়ার সময় আপনার শিশুর মাথা এবং ঘাড়কে অবলম্বন দেওয়ার দিকে মনোযোগ দিন।
4. আম্বিলিকাল কর্ডের গোঁড়াটির যত্ন
1ম মাসে নবজাতক শিশুর যত্নের একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক হল আম্বিলিকাল কর্ডের গোঁড়াটির যত্ন নেওয়া। প্রথম 2-3 সপ্তাহে আপনার শিশুকে স্নান করাবেন না। তার বদলে অল্প উষ্ণ জল দিয়ে একটি স্পঞ্জ স্নান দিন। নাভি এলাকা পরিষ্কার এবং শুষ্ক রাখুন। বাচ্চাদের ডায়পারটি ভাঁজ করে নিচে নামিয়ে রাখুন যাতে নাভির গোঁড়াটি শুকিয়ে যায়। নাভি এলাকায় হাত দেওয়ার আগে আপনার হাত নির্বীজিত করুন। পরিষ্কার করতে, একটি আর্দ্র কাপড় ব্যবহার করুন এবং একটি পরিষ্কার, শোষক কাপড় দিয়ে শুকনো করুন। কর্ডের গোড়ায় সংক্রমণের লক্ষণ আছে কিনা দেখুন। যদি নাভি অঞ্চলে লালভাব, ফোলা, গন্ধযুক্ত স্রাব বা পুঁজ থাকে এবং রক্তপাত হয়, তবে শিশুটিকে শিশুরোগ বিশেষজ্ঞের কাছে নিয়ে যান।
5. ডায়পার পরানো
প্রসবের পরে নবজাতক শিশুর যত্ন নেওয়ার সময় একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক হল ঘন ঘন ডায়পার পরিবর্তন করা। আপনার শিশু পর্যাপ্ত বুকের দুধ বা ফরমূলা পেলে, নিয়মিত মলত্যাগের সাথে সাথে সে দিনে কমপক্ষে 6 থেকে 8 টি ডায়পার ভেজাবে। ডায়পারটি যেই ভর্তি মনে হবে, তখনই সেটি বদলে দিন। আপনাকে এমনকি এটি দিনে 10 বারও পরিবর্তন করতে হতে পারে। একটি নোংরা ডায়পার পরিবর্তন করার জন্য, আপনার একটি চেঞ্জিং শীট, মৃদু ডায়াপার ওয়াইপ, ডায়াপার ফুসকুড়ি ক্রিম বা শিশুর পাউডার এবং পরিষ্কার ডায়পার প্রয়োজন হবে। ইউটিআই প্রতিরোধের জন্য আপনার কন্যা সন্তানের শরীরের সামনে থেকে পিছনের দিক পর্যন্ত মুছে দিন, পিছনের দিক থেকে সামনের দিক পর্যন্ত নয়। এবং আপনার শিশুকে প্রতিদিন কয়েক ঘন্টা ডায়পার ছাড়া থাকতে দিন।
6. স্নান
নবজাতককে স্নান করানো একটি সূক্ষ্ম কাজ। কর্ডের গোঁড়াটি শুকিয়ে খসে যাওয়ার পর, সপ্তাহে 2 থেকে 3 বার শিশুকে স্নান করানো উচিত। আপনি স্নানের জন্য শিশুকে নিয়ে যাওয়ার আগে, স্নানের এবং পরিবর্তনের সব সামগ্রী প্রস্তুত রাখুন। ঘুমের ঠিক আগে স্নান করালে শিশুদের আরো গভীর ঘুমে সাহায্য করে। আপনার একটি শিশুর বাথটব, অল্প উষ্ণ জল, হালকা শিশুর সাবান বা বডি ওয়াশ, একটি ওয়াশক্লথ, নরম তোয়ালে, শিশুর লোশন বা ক্রিম, নতুন ডায়পার, এবং শিশুর পরিষ্কার কাপড় প্রয়োজন হবে। আপনার সঙ্গী বা পরিবারের সদস্যকে সাহায্যের জন্য ডেকে নিন, যাতে একজন ব্যক্তি শিশুর ঘাড় ও মাথা জলের উপরে ধরে রাখতে পারেন এবং অন্যজন শিশুকে স্নান করাতে পারেন। সাবধানে সাবান ব্যবহার করুন। বাচ্চাদের জননাঙ্গ, স্কাল্প, চুল, ঘাড়, মুখ, এবং নাকের চারপাশে জমে যাওয়া শুকনো সর্দি ওয়াশক্লথ দিয়ে পরিষ্কার করুন। অল্প উষ্ণ জল দিয়ে আপনার শিশুর শরীর ধুয়ে ফেলুন। এই কাজ হয়ে গেলে, শিশুর দেহ নরম তোয়ালে দিয়ে শুকিয়ে নিন, লোশন প্রয়োগ করুন এবং একটি নতুন ডায়পার এবং জামা পরিয়ে দিন।
7. মালিশ
মালিশ আপনার শিশুর সাথে বন্ধন তৈরি করার একটি দুর্দান্ত উপায়। এটি শিশুকে ঘুমাতে সাহায্য করে এবং রক্ত সঞ্চালন ও হজম উন্নতিতেও সহায়তা করে। আপনার হাতে অল্প পরিমাণে শিশুর তেল বা লোশন ছড়িয়ে নিন। তারপর, আস্তে আস্তে এবং ছন্দময় গতিতে তার শরীরে টোকা দিন। মালিশ করার সময় তার চোখে চোখ রাখুন এবং তার সাথে কথা বলুন। বাচ্চাকে মালিশ করার ভালো সময় হল তার স্নানের আগে।
8. আপনার নবজাতককে সামলানো
আপনার বাচ্চার সাথে খেলার সময় কিছু বিষয় মনে রাখতে হবে। কখনো আপবার বাচ্চাকে ঝাঁকাবেন না, কারণ তার অভ্যন্তরীণ অঙ্গ কমনীয়, জোরে ঝাঁকালে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। বাচ্চাকে বাতাসে উপরের দিকে ছুঁড়ে দেবেন না, কারণ এটি বিপজ্জনক হতে পারে। শিশুকে স্পর্শ করার আগে সর্বদা হাত নির্বীজিত করুন বা ধুয়ে ফেলুন, কারণ তাদের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা সম্পূর্ণভাবে বিকশিত নয়, এবং এটি সহজেই সংক্রামিত হতে পারে। আপনি যদি আপনার শিশুকে বাইরে নিয়ে যান তবে অবশ্যই তাকে নিরাপদভাবে স্ট্রলার, গাড়ীর আসন বা বাচ্চার ক্যারিয়ারের সাথে বেঁধে রাখুন। প্রতিদিন কিছুক্ষণের জন্য আপনার বাচ্চাকে উপুড় করে শুইয়ে রাখুন। এটি তার ঘাড় এবং পিঠের পেশীকে শক্তিশালী করবে। এটি তার দৃষ্টিকেও উন্নত করবে, কারণ সে উপরের দিকে ও পাশের দিকে দেখতে পাবে।
9. ঘুমানো
নবজাতকদের প্রথম 2 মাসে প্রায় 16 ঘন্টা করে ঘুমাতে হবে। তারা সাধারণত 2 থেকে 4 ঘন্টা ধরে ছোট ছোট করে ঘুম নেয় এবং তারা ক্ষুধার্ত হলে বা ভিজিয়ে ফেললে জেগে ওঠে। শিশুকে প্রতি 3 ঘণ্টায় যেহেতু খাওয়ানোর প্রয়োজন হয়, তাই আপনাকে তাকে জাগিয়ে তুলে খাওয়ানোর প্রয়োজন হতে পারে। সে নবজাতকদের আদর্শ ঘুমের প্যাটার্ন অনুসরণ না করলে চিন্তা করবেন না। প্রতিটি শিশু আলাদা এবং তার একটি ভিন্ন ঘুমচক্র আছে। ঘুমের সময় আপনার বাচ্চার মাথার অবস্থানটি পালটে দিতে ভুলবেন না। এটি মাথার উপর চ্যাপ্টা দাগ গঠনে বাধা দেয়। শিশুর যাতে দমবন্ধ না হয়ে যায়, তাই ঘুম পাড়ানোর সময় তাকে অবশ্যই চিত করিয়ে শোয়াবেন। মা যেন শিশুর সাথে সাথে ঘুমিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেন। তিনি বাচ্চা ঘুমানোর সময়টিকে শান্তিতে স্নান করার জন্য বা খাবার খাওয়ার জন্যও ব্যবহার করতে পারেন।
ঘুমানো
10. নখ ছাঁটাই
নবজাতকের নখ খুব দ্রুত বৃদ্ধি পায়। বাচ্চা তার হাত নাড়াচাড়া করে তার নিজের মুখ বা শরীর আঁচড়ে ফেলতে পারে। অতএব, শিশুর নখ ছাঁটাই রাখা গুরুত্বপূর্ণ। শিশুর নখ নরম হয়, তাই শিশুর নখের ক্লিপার ব্যবহার করুন। শিশুর ঘুমানোর সময় ধীরে ধীরে নখ ছেঁটে দেওয়ার চেষ্টা করুন। খুব গভীরভাবে ছাঁটবেন না কারণ শিশুর নখ খুব নমনীয় এবং এটি শিশুর জন্য বেদনাদায়ক হতে পারে। নখের প্রান্তগুলি ছাঁটবেন না কারণ এটি নখকুনির কারণ হতে পারে।
নতুন বাবা-মারা পরিবার বা বন্ধুদের কাছ থেকে সাহায্য চাইতে পারেন যাতে তারা বিশ্রাম নিতে পারেন এবং নিজেদের যত্ন নিতে পারেন। প্রথমবার যারা বাবা-মা হয়েছেন তারা নবজাতক শিশুর যত্নের বিভিন্ন দিক সম্পর্কে খুব বিহ্বল হতে পারেন। এই নিবন্ধটি নতুন মায়েদের সাহায্য করবে আস্থার সাথে তাঁদের নবজাতকদের যত্ন নিতে।