বিয়ের এক মাস পরেই জিসান আবিস্কার করলো রাসেল ভীষণ খুঁতখুঁতে। কেবল বাসাতেই নয়, বরং কোন আত্মীয় বা কলিগের বাসাতে গেলেও জিসান নানা দোষ নিয়ে আলোচনা করে ও সবার সামনেই। জিসানের ভীষণ কষ্ট হয়। কিন্তু কাউকে বলতেও পারে না ও! ওর শুধু মনে হয়, রাসেল তো তার স্বামী (husband), সবার সামনে এভাবে ওর দোষ নিয়ে আলোচনা না করে, ও কি পারতো না শুধু জিসানকে একা একটু বুঝিয়ে বলতে! আর এতে তো রাসেলকে নিয়েও আত্মীয়রা হাসাহাসি করে। সেটাও ভালো লাগে না মিতির। সম্পর্কটা এভাবেই দিন দিন খারাপের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে।
পাঠক, রাসেল-জিসানের ঘটনা একটা উদাহরণ মাত্র! কিন্তু এমনটা ঘটে প্রায়শই। তাই একটু খেয়াল রাখুন, নিজের স্বামী (husband)সম্পর্কে সবার সামনে কিছু বিষয় আলোচনা থেকে বিরত থাকুনঃ
১। আপনার স্বামীর সাথে তো ওর স্বামী (husband)র তুলনাই হয় নাঃ
আপনার স্বামীর খাটো করে হয়তো আপনি অন্যের প্রশংসায় পঞ্চমুখ হচ্ছেন, কিন্তু আপনার জন্যে সব সময় ভালোবেসে খাবার তৈরী করার মানুষটি কি এতে কষ্ট পান না? যার প্রশংসা করছেন, তার প্রশংসাই করুন। অযথা নিজের স্বামীর (husband) সাথে তুলনা দিয়ে কেবল তাকে আপনি কষ্টই দেন না, বরং নিজেও নিজের অজান্তেই সামনের মানুষটির সামনে অনেকখানিই ছোট হয়ে যান!
২। ও ভীষণ ঝগড়াটেঃ
মান অভিমান হোক বা মনোমালিন্য, দাম্পত্যে সবারই এমনটা থাকে। একটু আধটু ঝগড়া ঝাঁটি বরং সম্পর্ককে মজবুত করতে ভূমিকা রাখে। কিন্তু এটি আপনার ও আপনার স্বামীর একান্ত ব্যক্তিগত ব্যাপার। এটা সবার সামনে বলে স্বামীর (husband)ওপর দায় চাপাতে চান অনেকেই। যা আপনার সুন্দর মানসিকতার পরিচয় দেয় না।
৩। ইশ! আমার স্বামী (husband)যদি আপনার মতন হতোঃ
অন্য কোন পুরুষের সামনে এ কথাটা বলছেন আপনি। এর ফলে প্রথমত আপনার স্বামী (husband) যে কী ভীষণ কষ্ট পান, তা কি আপনই জানেন? আর যাকে বলছেন, তিনিও আপনাকে একজন হীনমন্যতায় ভোগা অসুখী ব্যক্তি ভেবে করুণা ছাড়া আর কিছুই করবেন না।
৪। ও আগে পারতো এখন আর পারে নাঃ
আপনার স্বামী (husband) হয়তো আগে গান গাইতেন, লেখালিখি বা নাচ করতেন। বিয়ের পর সাংসারিক ঝামেলায় হয়তো তার চর্চা নেই। কিন্তু তাই বলে সবার সামনে তার প্রতিভাকে ব্যর্থতায় ঢেকে দেবেন না। কেননা তিনি যা প্রতিভার অধিকারী তার চর্চা করলে আবারো পারবেন। তাই তার প্রতিভার সম্মান দিন।
৫। আমার স্বামী তো আপনার স্বামী মত সুন্দর নাঃ
এটির মত নোংরা কথা জগতে দ্বিতীয়টি নেই। আপনার স্বামীর (husband)সামনেই যদি অন্য কোন পুরুষের কথা বলার অভ্যাস থাকে। তবে এটি তো আপনার স্বামীকে কষ্ট দেয় আর সবার সামনে আপনাকে কিছুটা চারিত্রিক ত্রুটি সম্পন্ন হিসেবেও প্রমাণ করে।
৬। আমার বাসার বাইরে বন্ধুদের সাথে সময় কাটাতেই ভালো লাগেঃ
এর মানে আপনি যাই দাঁড় করাতে চান না কেন, সবার সামনে এর একটাই মানে দাঁড়ায়, আপনি আপনার স্বামীর (husband) সাথে দাম্পত্যজীবনে সুখী নন। এ কথাটি আপনার মনেই রাখুন।
৭। ওকে সব পোষাক মানায় নাঃ
আপনার স্বামী হয়তো অতিরিক্ত মোটা বা শুকনো। তাই বলে সবার সামনে তার ত্রুটি নিয়ে আলোচনা করা কি উচিত বলুন? আপনার স্বামীকে (husband)কোন বিশেষ পোষাক না মানালে তাকে সেটি ঘরেই বলুন। ব্যক্তিগত কথা সবার সামনে প্রচারের কোন মহিমা নেই।
৮। ওর চেয়ে ভালো ছেলেকে বিয়ে করতে পারতাম আমিঃ
“পারতেন তো করেন নি কেন?” শুধু আপনার স্বামীই নয়। এমন কথায় হাসবে অনেকেই। এতে আপনার নিজের অসম্মান ছাড়া আপনার স্বামীর (husband) কোন অসম্মান নেই। এসব কথা বলে যতটা না আপনার স্বামীকে কষ্ট দিচ্ছেন আত্র চেয়ে সবার সামন এহাসির পাত্রেই পরিণত হচ্ছেন আপনি।
৯। ও তো অনেক খরচ করে, মিথ্যা বলেঃ
দয়া করে বাইরের মানুষকে নালিশ করা বন্ধ করুন। আপনার স্বামীকে (husband) ওরা পরিবর্তণ করতে পারবে না। পারলে আপনিই পারবেন। তাই খরচ কমাতে বাজেট করুন। মিথ্যা কমাতে আপনার উপর আস্থা তৈরীর চেষ্টা করুন।