প্রতিটি দেশের মানুষই সৌন্দর্য সচেতন। তবে দেশ ভেদে এই সৌন্দর্য চর্চার ধরণ বদলে যায় অনেকখানি। কোন দেশের মানুষ মুখে শুধুমাত্র বরফ ঘষেই রূপচর্চার ঝামেলা চুকিয়ে ফেলে আবার কোন দেশে অনেকগুলো উপাদান একসাথে মিশিয়ে অনেক সময় ব্যয় করে ফেসপ্যাক(Face pack) বানিয়ে সেই মিশ্রণ ব্যবহার করে মুখের ত্বকের যত্নের জন্য। আজকের এই ফিচারে ভিন্ন ভিন্ন দেশের ত্বকের ভিন্ন রকম সৌন্দর্য চর্চার এবং মুখের নানা রকম সমস্যার ফেসপ্যাকের বর্ণনা তুলে ধরা হলো যা সাহায্য করতে পারে আপনার নিত্যদিনে সৌন্দর্যচর্চার ক্ষেত্রে।
দীপ্তিময় ত্বকের জন্য লাল আঙ্গুর (চিলি)
চিলিয়ান নারীরা বলে থাকেন যে, তাদের ত্বক(Skin) উজ্জ্বল হয়ে থাকে লাল আঙ্গুরের অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট উপাদান সমূহের জন্য। তারা লাল আঙ্গুরের সাথে দুই টেবিল চামচ ময়দা(Flour) মিশিয়ে একটি পেষ্ট তৈরি করেন। পেষ্ট তৈরি করা হয়ে গেলে সেটি পুর মুখে লাগিয়ে দোষ মিনিট পড়ে ধুয়ে ফেলেন। এই পেষ্ট সকালে ব্যবহার করলে ভালো ফল পাওয়া যায়।
মুখে বরফ ঘষা এবং ঠাণ্ডা ও গরম ফেসপ্যাক ব্যবহার করা (ফ্রান্স)
ফ্রান্সের নারীরা মূলত দুইটি ভিন্ন ভিন্ন উপায়ে মুখের যত্ন নিয়ে থাকেন। সাধারণত তারা মুখে বরফ ঘষে থাকেন। এর ফলে মুখের ত্বকের(Skin) রক্ত চলাচলে সাহায্য ত্বরান্বিত হয়। যা মুখের ত্বককে স্বাস্থ্যকর এবং উজ্জ্বল করে তোলে এছাড়া আরেকটি যে উপায়ে তারা মুখের ত্বকের যত্ন নিয়ে থাকেন সেটি হল, ঠাণ্ডা ও গরম ফেসপ্যাক(Face pack) ব্যবহার করা। এটি মুখের রঙ উজ্জ্বল করে, রক্ত চলাচলা বৃদ্ধি করে, ত্বকের নমনীয়তা বৃদ্ধি করে এবং ত্বক কোমল করে। এর পদ্ধতিটা খুবই সহজ। দুইটি বাটিতে একে একে গরম এবং ঠাণ্ডা পানি(Water) নিয়ে দুইটি আলাদা তাওয়েল ঠাণ্ডা ও গরম পানিতে চুবাতে হবে। প্রথমে গরম পানির টাওয়েল তুলে পানি নিংড়ে সেটি মুখের উপরে দিয়ে কিছুক্ষণ রেখে দিতে হবে, এরপর একই পদ্ধতিতে ঠাণ্ডা পানির তাওয়েল মুখের উপরে দিয়ে রাখতে হবে।
ডার্ক সার্কেল ভালো করতে আলু (ব্রাজিল)
আলু খুব পাতলা করে কেটে চোখের নীচের অংশে সমানভাবে দিয়ে দোষ মিনিট অপেক্ষা করতে হবে। এরপর মুখ(Face) ধুয়ে ফেলতে হবে।
মুখের নমনীয়তা বাড়াতে নারিকেল তেল (কোরিয়া)
মুখের নমনীয়তা এবং কোমলতা বৃদ্ধি করার জন্যে কোরিয়ান নারীরা মুখের ত্বকে নারিকেল তেল(Coconut oil) ব্যবহার করেন। মুখে কোন ময়েশ্চারাইজিং ক্রিম ব্যবহারের পূর্বে অল্প পরিমাণে নারিকেল তেল পুরো মুখে লাগিয়ে নেন তারা।
মুখের ত্বক পরিষ্কার করতে “রাইস ওয়াটার” (জাপান)
জাপানের বহুল প্রচলিত ত্বক(Skin) পরিচর্যাকারী উপায় এবং উপাদান হচ্ছে রাইস ওয়াটার। এটি তৈরি করা হয় ভাত এবং পানি দিয়ে। রান্না করা ভাত ব্লেন্ডারে ব্লেন্ড করে এরপর এতে পরিমাণ মতো পানি যোগ করে একটি ঘন পেষ্ট এর মতো তৈরি করা হয়। এরপর পুরো মুখে লাগিয়ে শুকিয়ে যাওয়ার পর ধুয়ে ফেলতে হয়। এতে করে মুখের ত্বকের কোলাজেন তৈরি ত্বরান্বিত হয় এবং ত্বক অনেক কোমল হয়।
কপালের র্যাশ কমাতে মধু-লেবুর মিশ্রণ (ভারত)
প্রায়ই দেখা যায় মুখের আর কোথাও কোন সমস্যা না থাকলে সমস্ত কপালে ছোট ছোট র্যাশ হয়ে ভরে গেছে। এই সমস্যা থেকে মুক্তি মিলবে মধু-লেবুর এই মিশ্রণ ব্যবহারে। এক টেবিল চামচ পরিমাণ লেবুর রস(Lemon juice) এবং এক টেবিল চামচ পরিমাণ মধু একসাথে মিশিয়ে কপালের সমস্যাযুক্ত স্থানে লাগিয়ে রেখে দিতে হবে ২০ মিনিট মতো। নিয়মিত ব্যবহারে সমস্যা কমে যাবে অনেকখানি।
মুখের যত্নে হলুদ গুঁড়া (গ্রীস)
হলুদের তীব্র অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল এবং অ্যান্টিসেপটিক উপাদান মুখের ত্বকের জন্য খুবই উপকারী এবং প্রয়োজনীয়। হলুদ গুঁড়ার সাথে মধু(Honey) মিশিয়ে এরপর সেই মিশ্রণ মুখের ত্বকে লাগাতে হবে। এটি সপ্তাহে অন্তত দুইবার করতে হবে।
ত্বকে বয়সের ছাপ প্রতিরোধে অ্যালোভেরা জেল (মিশর)
অ্যালোভেরা জেল হলো প্রাকৃতিক উপাদান যা ত্বকে অকালে বয়সের ছাপ(Age impression) পড়া থেকে প্রতিরোধ করে। এটি ত্বকে নতুন কোষ তৈরি করতে এবং ত্বকের ভেতর থেকে পুষ্টি জোগাতে সাহায্য করে থাকে।