মেকাপের জন্য অপরিহার্য একটি উপাদান হলো কনসিলার । চোখের ডার্ক সার্কেল ঢাকতে কিংবা ব্রণের দাগ(Acne scars) ঢাকতে কনসিলারের জুড়ি নেই। কিন্তু হয়তো অনেকেরই জানা নেই যে শুধু দাগ ঢাকা ছাড়াও কনসিলারের আছে নানান ব্যবহার। জেনে নিন কনসিলার(consuler) ব্যবহারের ১৫টি ট্রিকস সম্পর্কে।
(১) আগেই কনসিলার নয়
মেকাপের ক্ষেত্রে অনেকেই একটি ভুল করে বসেন। আর তা হলো প্রথমেই কণসিলার ব্যবহার করা। মেকাপের নিয়ম হলো প্রথমে ফাউন্ডেশন ব্যবহার করা এবং তারপর প্রয়োজনে কনসিলার ব্যবহার করা। কারণ ফাউন্ডেশন(Foundation) ব্যবহারে বেশ কিছু খুত ঢেকে যায়। ফলে খুব অল্প কনসিলার ব্যবহারেই ত্বককে নিখুত দেখায়। আগেই কনসিলার ব্যবহার করে তার উপর ফাউন্ডেশন ব্যবহার করলে কনসিলার ত্বক থেকে সরে গিয়ে আনইভেন স্ক্রিন কালার হয়ে যায়।
(২) ট্রায়াঙ্গাল আঁকুন
চোখের নিচের ডার্ক সার্কেল(Dark Circle) ঢাকার জন্য অনেকেই ‘হাফ মুন’ আকৃতিতে কণসিলার ব্যবহার করেন। কিন্তু সঠিক নিয়মটি হলো চোখের নিচে(Under the eyes) কনসিল করার জন্য ‘ট্রায়াঙ্গাল’ আঁকা। ‘ট্রায়াঙ্গাল’ একে মিশিয়ে নিলে কনসিলার ভালো করে মিশে যায় এবং ন্যাচারাল লাগে।
(৩) প্রাইমারের বিকল্প
অনেকগুলো টাকা খরচ করে আই প্রাইমার কিনতে না চাইলে কোনো সমস্যা নেই। আপনার আই লিডের উপর কণসিলার(consuler) দিয়ে ভালো করে ব্লেন্ড করে নিন। কনসিলার ও প্রাইমারের কাজ করবে বেশ ভালোভাবেই।
(৪) স্কিন কারেকশন
স্কিনে পিম্পল থাকলে সেটা ঢেকে ফেলতে ব্যবহার করুন সবুজ রঙ এর কনসিলার। পিম্পলের উপর সবুজ রঙ এর কনসিলার লাগিয়ে নিন। এরপর ভালো করে ব্লেন্ড করুন। এর উপর আপনার ত্বক(Skin) এর রঙ এর কনসিলার লাগিয়ে মিশিয়ে নিন। আপনার কাছে সবুজ কণসিলার না থাকলেও সমস্যা নেই। সবুজ রঙ এর ম্যাট আইশ্যাডো ব্যবহার করেও ব্রণ ঢাকতে পারবেন আপনি।
(৫) পিম্পল ঢাকতে
গলার, ঘাড়ের কিংবা পিঠের পিম্পল ঢাকতে হুবহু ত্বক(Skin) এর রঙ এর কনসিলার ব্যবহার করুন। পিম্পলের উপর আঙ্গুল দিয়ে মিশিয়ে ঢেকে দিন পিম্পলটি। এবার এর উপর লুজ পাউডার চেপে লাগিয়ে নিন। এতে কণসিলার জায়গামত থাকবে সারাদিন।
(৬) কনসিলারের বিকল্প ফাউন্ডেশন
আপনার কাছে যদি কোনো ফাউন্ডেশনই না থাকে তাহলেও কোনো সমস্যা নেই। আপনি আপনার ফাউন্ডেশনটাকেই ব্যবহার করতে পারবেন কনসিলার হিসেবে। ত্বকের দাগ(Skin scars) বা পিম্পলের উপর লিকুইড ফাউন্ডেশনের একটি ডট দিন। এরবার দুই মিনিট অপেক্ষা করুন। দুই মিনিট পর ফাউন্ডেশন শুকিয়ে কিছুটা ঘন হয়ে যাবে। এবার মিশিয়ে নিন ভালো করে।
(৭) চোখের ক্লান্তি ঢাকতে
সারারাত ঘুম না হলে চোখে স্পষ্ট ক্লান্তির ছাপ পরে। এই ছাপ ঢাকতে কনসিলার(consuler) ব্যবহার করতে পারেন। আপনার স্কিন টোনের চাইতে এক শেড হালকা রঙ এর কনসিলার নিন। এবার চোখের ভেতরের কোণে, চোখের পাতার উপর মাঝখানে এবং আইব্রো বোনের উপর লাগিয়ে নিন কনসিলার। এরপর ভালো করে মিশিয়ে নিন।
(৮) সঠিক রঙ নির্বাচন
নানান রঙ এর কনসিলারের আছে নানান কাজ। যেমন কমলা রঙ এর কণসিলার চোখের নিচের নীলচে কালি ঢাকে, সবুজ কনসিলার(consuler) লালচে ভাব কমায়, গোলাপি কনসিলার ত্বকের হলুদ ভাব কমায়। হলুদ কনসিলার মোটামুটি সব ধরণের স্কিন কারেকশনের ক্ষেত্রেই ব্যবহার করা যায়।
(৯) চোখের ফোলা-ভাব ঢাকতে
চোখের ফোলা-ভাব ঢাকার জন্য কনসিলার ব্যবহার করতে পারেন। এক্ষেত্রে আই ক্রিমে, হাইলাইটারের সাথে কণসিলার মিশিয়ে চোখের নিচে এবং ব্রো-বোনের উপর লাগিয়ে মিশিয়ে নিন।
(১০) কনসিলার ঠিক রাখতে
আপনার কনসিলার কি মেকাপ(Makeup) করার কিছুক্ষণ পরে কেকি দেখায় কিংবা যায়গা থেকে সরে যায়? এই সমস্যা দূর করতে একটি টিস্যু পেপার আলতোভাবে চেপে নিন। এতে অতিরিক্ত তেল শুষে নিবে টিস্যুটি।
(১১) আই লাইনার ঠিক করতে
আইলাইনারের ছোটখাটো ভুল তো সবসময়েই হয়। এতে বিপাকে পড়তে হয় বেশ ভালোমতোই। কনসিলার ব্যবহার করে খুব সহজেই আইলাইনারের(Ileiner) ছোটখাটো ভুলগুলো ঢেকে ফেলা সম্ভব।
(১২) লিপ শেপিং
ঠোটে লিপস্টিক(Lipstick) লাগানোর পরে চারপাশে স্কিন কালারের কণসিলার দিয়ে আউটলাইন করে নিন। এতে ঠোটের আকৃতি সুন্দর দেখাবে এবং লিপস্টিকও সারাদিন ছড়াবে না।
(১৩) কনট্যুরিং এবং হাইলাইটিং
কনসিলার ব্যবহার করে কনট্যুরিং এবং হাইলাইটিং করা যায় সহজেই। কনট্যুরিং এর জন্য দুই শেড গাঢ় কনসিলার এবং হাইলাইটিং এর জন্য দুই শেড হালকা কনসিলার ব্যবহার করুন। পেনসিল কনসিলার ব্যবহার করলে ভালোভাবে কনট্যুরিং এবং হাইলাইটিং করতে পারবেন।
(১৪) কলারবোন কনসিলিং
কনট্যুরিং এবং হাইলাইটিং পদ্ধতিতে কণসিলার(consuler) ব্যবহার করে কলারবোনটাকে ফুটিয়ে তুলতে পারে। কলার বোনের উঁচু স্থানে হালকা রঙ এর কনসিলার এবং নিচু স্থানে গাঢ় রঙ এর কনসিলার ব্যবহার করতে হবে।
(১৫) টিন্টেড ময়েশ্চারাইজার
আপনার নিজের টিন্টেড ময়েশ্চারাইজার(Moiseschreiser) নিজেই তৈরি করে নিতে পারবেন খুব সহজেই। ময়েশ্চারাইজিং ক্রিমের সাথে কনসিলার মিশিয়ে নিলেই তৈরি হয়ে যাবে টিন্টেড ময়েশ্চারাইজার।