সুন্দর,ঘন ও লম্বা চুল(Long hair) সবারই কাম্য। একজন নারীর সুন্দর, লম্বা ও ঘন চুল যে কারো মনে ছাপ ফেলতে বাধ্য। কিন্তু ইদানিং আবহাওয়া ও আরও নানান কারনে চুলকে লম্বা ও ঘন করতে পারেন না অনেকেই, যদিও মনে মনে ঠিকই কামনা করেন। আবার লম্বা ঘন চুল(Dense hair) পেতে অনেকেই ডাক্তারের শরণাপন্ন হন। কিন্তু অনেকেই জানেন না যে তাঁর ঘরেই রয়েছে চুলকে লম্বা ঘন ও সুন্দর করে তোলার ঔষধ। ঘরোয়া পদ্ধতিতে খাবারের মাধ্যমে চুলের যত্ন(Hair care) সেই প্রাচীনকাল থেকেই হয়ে আসছে। মিশরীয়, গ্রীক ও রোমানরা নিজেদের ঘরেই খুঁজে নিতেন চুলের সমস্যার সমাধান। তাই আজকে আপনাদের জন্য রইল ঘরোয়া পদ্ধতিতে চুলকে লম্বা, ঘন ও স্বাস্থ্যজ্জ্বল করার ৪টি পদ্ধতি ঘরে মজুদ ৪টি খাদ্য উপাদানের মাধ্যমে। জেনে নিন কোন কোন খাবার কী পদ্ধতিতে আপনার চুলকে করবে লম্বা, ঘন ও স্বাস্থ্যউজ্জ্বল।
সবুজ চা (গ্রিন টি)
গ্রিন টির স্বাস্থ্য উপকারিতা সম্পর্কে সবাই খুব ভালো করেই জানেন। আজকে জেনে নিন গ্রিন টি ব্যবহারে কি করে স্বাস্থ্যউজ্জ্বল চুল(hair) পাওয়া যায়। গ্রিন টির অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট উপাদানসমূহ ত্বকের জন্য যতটা কার্যকরী চুলের জন্য ঠিক ততোটাই উপকারী। গ্রিন টি চুলের আগা ফাটা রোধ করে যার ফলে চুল লম্বা হওয়ার সম্ভাবনা বাড়ে। এছাড়াও গ্রিন টি চুল পড়া(Hair fall) রোধ ও নতুন চুল গজানোতে সহায়তা করে।
পদ্ধতিঃ গ্রিন টি কম বেশি সবাই বানাতে জানি। বাজারে গ্রিন টি পাওয়া যায়। প্রথমে গ্রিন টি(Green tea) বানিয়ে নেবেন। অনেকেই গ্রিন টিতে মধু(Honey) বা চিনি দিয়ে থাকেন। কিন্তু চুলে ব্যবহারের জন্য গ্রিন টি তে চিনি বা মধু দেবেন না। এক কাপ পরিমাণ গ্রিন টি নিয়ে হালকা গরম থাকতেই পুরো চুলে লাগিয়ে নিন। চুলের গোড়ায় ভালো করে লাগাবেন। ১ ঘণ্টা চুলে লাগিয়ে রাখুন। তারপর ঠাণ্ডা পানি দিয়ে চুল ধুয়ে ফেলুন।
ডিম
স্বাস্থ্য উজ্জল চুলের জন্য ডিমের ব্যবহারটিও বেশ প্রাচীন। ডিমে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন যা চুল পড়া(Hair fall) রোধ করে। এছাড়া ডিমে আরও রয়েছে সালফার, জিংক, আয়রন, সেলেনিয়াম, ফসফরাস ও আয়োডিন যা নতুন চুল গজাতে সাহায্য করে চুলের ঘনত্ব বাড়ায়।
পদ্ধতিঃ প্রথমে একটি বাটিতে একটি ডিমের সাদা অংশ নিন। এতে ১ চা চামচ অলিভ অয়েল(জলপাই তেল) ও ১ চা চামচ মধু নিন( চুলের দৈর্ঘ্য ও পরিমাণ অনুযায়ী অলিভ অয়েল(Olive oil) ও মধুর পরিমাণ বাড়াতে পারেন)। তারপর উপকরণগুলো খুব ভালো করে মেশান। যখন এটি মসৃণ পেস্টের আকার ধারন করবে তখন এত ব্যবহার উপযোগী হবে। মসৃণ পেস্টের মত হয়ে গেলে মাথার ত্বকে আলতো ঘষে মিশ্রণটি লাগিয়ে ফেলুন। ২০ মিনিট পর প্রথমে ঠাণ্ডা পানি ও পরে শ্যাম্পু দিয়ে চুল ধুয়ে ফেলুন। সপ্তাহে অন্তত ১ বার এটি ব্যবহার করার চেষ্টা করুন। ভালো ফল পাবেন।
আলু
আলুর ত্বকের ও অন্যান্য অনেক ক্ষেত্রের গুণাবলী সম্পর্কে অনেকেই জানলেও আলু চুলের জন্য কতোটা উপকারী তা অনেকেই জানেন না। আলু হচ্ছে টাকের সমস্যা দূর করার জাদুকরী উপাদান। আলুর ভিটামিন(Vitamin) বি৬ টাক পড়া রোধে কাজ করে। এছাড়াও আলুর মধ্যে রয়েছে ভিটামিন সি, পটাশিয়াম, ম্যাংগানিজ ও ফাইবার যা নতুন চুল গজানো, চুলের অকালপক্বতা রোধ ইত্যাদির জন্য কাজ করে।
পদ্ধতিঃ একটি মাঝারি আকৃতির আলু ঝুরি করে চিপে এর থেকে রস বের করে নিন। এরপর একটি বাটিতে আলুর রস(Potato juice), একটি ডিমের সাদা অংশ ও ১ চা চামচ মধু খুব ভালো করে মেশান। খুব ভালো করে মিশে গেলে, মিশ্রণটি চুলের গোঁড়ায় আলতো ঘষে লাগিয়ে নিন। এভাবে ২ ঘণ্টা রেখে দিন। ২ ঘণ্টা পর একটি মৃদু শ্যাম্পু(Shampoo) দিয়ে চুল ভালো ভাবে ধুয়ে নিন।
পিঁয়াজ
ঘরোয়া পদ্ধতিতে চুলের বৃদ্ধির সবচাইতে পুরনো ও প্রাচীন পদ্ধতির মধ্যে অন্যতম হচ্ছে পিঁয়াজের ব্যবহার। পিঁয়াজ সালফারের একটি বেশ ভালো উৎস। পিঁয়াজের রসের সালফার মাথার ত্বকের কোলাজেন টিস্যু উৎপাদনে সহায়তা করে। ফলে নতুন চুল গজায়।
পদ্ধতিঃ একটি লাল পেঁয়াজ নিন। লাল পেঁয়াজে সালফারের পরিমাণ বেশি থাকে। তারপর পেঁয়াজটি কুচি করে কাটুন ও ভালো করে পাটায় থেঁতলে নিন। একটি নরম পাতলা কাপড়ে এই পেঁয়াজ রেখে চিপে রস বের করে নিন। তারপর এই পেঁয়াজের রস(Onion juice) সরাসরি মাথার ত্বকে লাগান। ১৫ মিনিট রাখুন। তারপর মৃদু কোন শ্যাম্পু দিয়ে চুল ধুয়ে ফেলুন। সপ্তাহে ২/৩ দিন ব্যবহারে ভালো ফল পাবেন। বাড়তি পাওনা হিসাবে দূর হবে খুশকি ও অন্যান্য সমস্যা।