কলা শক্তির মহান উৎস এবংএটি সহজে নষ্ট হয় না। একটি কলা আপনাকে অনেক ঘন্টা অবধি কর্মশক্তি যোগা। এটি অত্যন্ত ভালো তাদের জন্য যারা সকালের জলখাবারের সময় পান না। সময়ের অভাবে জলখাবার বাদ না দিয়ে একটি কলা(Banana) খেতে পারেন যদিও জলখাবার পরিত্যাগ করা বিচক্ষণতার কাজ নয়। কলা সংরক্ষণ করা যায় ও সহজে নষ্ট হয় না। স্বাস্থ্যকর খাদ্যের সাথে সাথে এটি আমাদের ত্বকেরও উপকার করে তাই চুল ও ত্বকের(Skin) জন্য একে ব্যবহার করা যেতে পারে।
অনেক ঘরোয়া প্রতিকার এটির দ্বারা সম্ভব। এই ফলটির দ্বারা প্রাকৃতিক উপায়ে আপনি আপনার নিত্য সৌন্দর্যচর্চা করতে পারেন যা অন্য রাসায়নিক(Chemicals) যুক্ত দ্রব্যে উপকৃত নাও হতে পারেন। কলা, আর্দ্রতা, অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট এবং ফটোকেমিক্যালস-সমৃদ্ধ তাই ত্বক(Skin), শরীর এবং চুলের পুষ্টি প্রদান করার জন্য এটি একটি দুর্দান্ত ঘরোয়া প্রতিকার। এছাড়াও কলা সস্তা বলে খুব সহজেই পাওয়া যায়। সুতরাং, এখানে, আপনার নিত্য সৌন্দর্যচর্চার মধ্যে কলা ব্যবহারের সবচেয়ে ভাল উপায়ের একটি তালিকা চলুন আজ জেনে নেয়া যাক।
ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়াতে
এক চা চামচ কমলার রস(Orange juice), এক চা চামচ মধু ও অর্ধেকটা কলা ভালো করে চটকে মিশিয়ে নিন। এই প্যাক-টি মুখ এবং ঘাড়ে ব্যবহার করুন। ১৫-২০ মিনিট পর ঠাণ্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। তাৎক্ষণিক ত্বকের পরিবর্তন দেখতে পাবেন।
কালো দাগ দূর করতে
একটি পাকা কলা, এক টেবিল চামচ মধু ও এক টেবিল চামচ লেবুর রস(Lemon juice)- সবগুলো উপাদান মিশিয়ে প্যাক তৈরি করুন। এরপর প্যাক-টি ভালো করে মুখে লাগান। ১৫ মিনিট পর প্যাকটি শুকিয়ে গেলে কুসুম গরম পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলুন। আর দেখুন কলার ম্যাজিক! এই প্যাক-টি ত্বকের কালো দাগ দূর করে দিতে সাহায্য করে।
বলিরেখা দূর করতে
অর্ধেকটা পাকা কলার পেস্ট, এক চা চামচ টক দই(sour yogurt) এবং কয়েক ফোঁটা লেবুর রস একসঙ্গে মিশিয়ে নিন। প্রথমে মুখ ভালো করে ধুয়ে পরিষ্কার করে নিন। তারপর প্যাক-টি ব্যবহার করুন। প্যাক শুকিয়ে গেলে ঠাণ্ডা পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলুন।
ব্রণ সারাতে
একটি পাকা কলা, আধা চা চামচ বেকিং সোডা(Baking soda) এবং আধা চা চামচ হলুদ গুঁড়ো মিশিয়ে প্যাক তৈরি করে নিন। যদি খুব বেশি ঘন হয়ে যায় তবে এরসঙ্গে সামান্য পানি মিশিয়ে নিতে পারেন। প্যাক-টি ত্বকে ব্যবহার করুন। ১০-১৫ মিনিট পর কুসুম গরম পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলুন। এই প্যাক-টি ব্রণ প্রতিরোধ করে ব্রণ হওয়ার প্রবণতা কমিয়ে দিয়ে থাকে।
তেল নিয়ন্ত্রণের জন্য
নিত্য সৌন্দর্য্য চর্চার জন্য কলা ব্যবহারের উত্তম উপায় হল একটি মুখের প্যাক তৈরী করা। কলা, মধু ও লেবুর রস(Lemon juice) দিয়ে তৈরী মুখের প্যাক অত্যন্ত ফলপ্রদ মুখের শুষ্কতা বজায় রেখে তৈলাক্ততা দূর করতে।
নিস্তেজ ত্বকের জন্য
কলার মধ্যে ভিটামিন সি(Vitamin C) একটি দুর্দান্ত উপায় যা ত্বক উজ্জ্বল করতে সাহায্য করে। এর জন্য, কলার সাথে লেবুর রস ও চন্দন মেশাতে হবে।
আদ্রতা বজায় রাখতে
পটাশিয়াম ও অন্যান্য খনিজ সমৃদ্ধ বলে কলা আদ্রতা ধরে রাখতে সক্ষম। কলা চটকে মুখে মেখে দশ মিনিট মিশ্রণটি বসতে দিন। এরপর নরম ও নমনীয় ত্বকের ছোঁয়া পেতে মুখ ধুয়ে ফেলুন।
ব্রণের জন্য
কলার খোসা ব্রণের জন্য দায়ী রোগ জীবাণু (Bacteria) ধ্বংস করে ও জ্বালা কমাতে সাহায্য করে। শুধু ব্রণের ওপর কলার খোসার ভিতরের অংশটি ঘষুন। নিত্য সৌন্দর্য্য চর্চায় এটি সর্বোত্তম উপায়।
আসলে সারাটাক্ষণজুড়ে যতই “ত্বকের যত্ন নিন”- বলে গলা ফাটানো হোক না কেন, তা ততক্ষণ পর্যন্ত কার্যকর হবে না যতক্ষণ আপনি নিজে সে ব্যাপারে কনসার্ন্ড না হবেন! তাই দিনের কিছু সময় এতে ব্যয় করুন। বেশি সময়ও যে খরচ হয় না এর পেছনে তা তো দেখতেই পাচ্ছেন! তাই আবারও বলি, ভালো থাকুন, ত্বক সুন্দর ও সুস্থ রাখুন… সর্বোপরি ত্বকের যত্ন নিন।