স্থায়ীভাবে খুশকি (dandruff) তাড়ানোর ঘরোয়া সঠিক পদ্ধতি!
দরজায় কাড়া নাড়ছে শীত। সঙ্গে নিয়ে এলো চুলের জন্য হাজারও সমস্যা। শুধু কি তাই? এ সময় চুলেরও নানা সমস্যা শুরু হয়। শীতে খুশকির
(dandruff) প্রকোপ কয়েকগুন বেড়ে যায়। সব থেকে চিন্তার বিষয় হল অনেক সময়ই দামী দামী shampoo , তেল ব্যবহার করেও খুশকিকে (dandruff) দূর করা যায় না। অন্যের পরামর্শে এটা সেটা ব্যবহার করে চুলকাতে চুলকাতে মাথায় টাক পড়ে যায় তবুও কিছুতেই কিছু হয় না। তাই বেয়ারা খুশকির (dandruff) জন্য চাই সঠিক চিকিৎসা। আপনার যদি খুশকির সমস্যা থাকে তাহলে উচিৎ হবে নিকটস্থ হাসপাতালের চর্মরোগ বিভাগের চিকিৎসকদের পরামর্শ নেওয়া। তাদের দেওয়া যথাযথ চিকিৎসার মাধ্যমে খুশকিমুক্ত হওয়া সময়ের ব্যাপার মাত্র। তবে কতগুলি ঘরোয়া উপায়াও আছে যার সাহায্য খুশকি সমস্যার নিবারণ সম্ভব।
মেথির হেয়ারপ্যাক: মেথি ব্যবহার করলে খুব সহজে খুশকির (dandruff) হাত থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। এছাড়াও মেথি চুল পড়া, অকালপক্বতা এবং উকুনের মতো সমস্যা দূর করতেও কাজে আসে। এমনকি, চুলের গোঁড়া শক্ত করতে এবং চুলকে ঝলমলে রাখতে পারে মেথি। সারা রাত অল্প পানিতে মেথিদানা ভিজিয়ে রাখতে হবে। তারপর পানি থেকে মেথি আলাদা করে বেঁটে নিতে হবে। এবার বেঁটে রাখা মেথি এক ঘণ্টার জন্য চুলের গোঁড়ায় মেখে রেখে দিতে হবে। সময় হয়ে গেলে হালকা shampoo দিয়ে চুল ধুয়ে নিন।
দই: যারা চুলে মেহেদী ব্যবহার করেন, তাদের অনেকেই দইও ব্যবহার করে থাকেন। দই চুলকে সুস্থ এবং উজ্জ্বল রাখতে সাহায্য করে। তবে শুধুমাত্র চুলকে উজ্জ্বল রাখাই নয়, চুলের নানারকম সমস্যা দূর করতেও দইয়ের জুড়ি মেলা ভার। এক্ষেত্রে অল্প পরিমাণে দই চুলের গোঁড়ায় এবং চুলে লাগিয়ে নিতে হবে। এবার এক ঘণ্টার জন্য দই লাগিয়ে রাখার পর শ্যাম্পু দিয়ে চুল ধুয়ে নিন।
মেহেদী: চুলের সৌন্দর্য বাড়াতে মেহেদী যে কতটা বড় ভুমিকা গ্রহণ করে, তা আর নতুন করে বলার দরকার নেই। চুলকে ঘন, লম্বা এবং মজবুত করতে যেমন মেহেদী সাহায্য করে, তেমনই মেহেদী খুশকি (dandruff) দূর করতেও কাজে দেয়। মেহেদী সঙ্গে চায়ের লিকার, দই এবং কয়েক ফোঁটা লেবুর রস মেশাতে হবে। এবার এই মিশ্রণটি ৮ ঘণ্টা ধরে একটি পাত্রে ভিজিয়ে রেখে দিতে হবে। এবার চুলের গোঁড়ায় এবং চুলে লাগাতে হবে। টানা দুই ঘণ্টা রেখে চুল ধুয়ে নিতে হবে।
প্রশ্ন: আমি একজন বিবাহিত নারী। একজন দ্বীনদার মানুষের সাথে আমার বিয়ে হয়েছে। আলহামদু লিল্লাহ তার অনেক ভাল গুণ রয়েছে। সমস্যা হচ্ছে- তার ঘুম খুব ভারী। ঘুমালে ফজরের নামাযের জন্য সহজে উঠতে পারে না। অধিকাং সময় সে যদি জুনুবি অবস্থায় (নাপাক অবস্থায়) থাকে সে ঘুম থেকে উঠতে পারে না। এতে কি আমার গুনাহ হবে? আমি নিশ্চিতভাবে জানি যে, আমি যত চেষ্টা করি না কেন সে নামাযের জন্য উঠতে পারবে না। বিশেষতঃ সে যখন সফর থেকে আসে অথবা ক্লান্ত থাকে। তাই তার নামাযের কারণে আমি কি (সহবাস) থেকে বিরত থাকতে পারি?
উত্তর: সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর জন্য।
যখন কোন স্বামী (husband) তার স্ত্রীকে বিছানায় ডাকবে তখন সে ডাকে সাড়া দেয়া ফরজ। দলিল হচ্ছে সহিহ বুখারি ও সহিহ মুসলিম এ আবু হুরায়রা (রাঃ) কর্তৃক নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে বর্ণিত হাদিস:
“যদি কোন স্বামী তার স্ত্রীকে বিছানায় ডাকে কিন্তু স্ত্রী ডাকে সাড়া না দেয় ফলে স্বামী রাগ করে থাকে তখন ভোর হওয়া পর্যন্ত ফেরেশতারা তার উপর লানত করতে থাকে।”
শাইখুল ইসলাম (রহঃ) বলেন:
যখনি স্বামী (husband) স্ত্রীকে বিছানায় ডাকবে তখনি ডাকে সাড়া দেয়া স্ত্রীর উপর ফরজ…। যদি ডাকে সাড়া না দেয় তাহলে স্ত্রী গুনাহগার ও অবাধ্য হবে। যেমনটি আল্লাহ তাআলা বলেছেন:
“আর যাদের মধ্যে অবাধ্যতার আশঙ্কা কর তাদের সদুপদেশ দাও, তাদের শয্যা ত্যাগ কর এবং প্রহার কর। যদি তাতে তারা বাধ্য হয়ে যায়, তবে আর তাদের জন্য অন্য কোন পথ অনুসন্ধান করো না।” [আল-ফাতাওয়া আল-কুবরা (৩/১৪৫-১৪৬) থেকে সংকলিত]
সহবাসের পর স্বামী (husband) যদি ঘুমিয়ে থাকে তাহলে স্ত্রীর দায়িত্ব ফজরের নামাযের জন্য স্বামীকে জাগিয়ে দেয়া। যদি স্বামী অবহেলা করে না জাগে তাহলে স্বামীর গুনাহ হবে। স্ত্রীর কোন গুনাহ হবে না। সুতরাং স্ত্রীর উচিত তার দায়িত্ব পালন করা। স্বামীর নামাযের দায়িত্ব ও অবহেলার দায় তার উপর, যদি সে অবহেলা করে।
ফিকাহবিদগণ স্বামীর(husband) বদলে স্ত্রী সংক্রান্ত একটি মাসয়লার হুকুম স্পষ্টভাবে উল্লেখ করেছেন সেটি এখানে উল্লেখ করলে বিষয়টি পরিস্কার হবে:
রমলি (রহঃ) বলেন: যদি স্বামী জানেন যে, যদি রাতে সহবাস করেন তাহলে স্ত্রী ফজরের নামাযের সময় গোসল করবে না; এতে করে তার নামায ছুটে যাবে, ইবনে আব্দুস সালাম বলেন: এ প্রেক্ষিতে স্বামীর (husband) উপর সহবাস করা হারাম হবে না। নামাযের সময় স্ত্রীকে গোসল করার নির্দেশ দিবে। ফাতাওয়াল আহনাফ গ্রন্থেও এমন একটি ফতোয়া রয়েছে।[হাসিয়াতুহু আলা আসনাল মাতালিব (৩/৪৩০) থেকে সংকলিত]
নাওয়াযিলিল বারযালি গ্রন্থে আছে:
ইয্যুদ্দিনকে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল: যে ব্যক্তি রাতে ছাড়া স্ত্রী সহবাসের সুযোগ পান না। রাতে যদি স্ত্রী সহবাস করেন তাহলে স্ত্রী গোসল করতে অলসতা করে; এতে তার নামায ছুটে যায়। এমতাবস্থায় স্বামীর(husband) জন্য কি সহবাস করা জায়েয হবে, এতে করে স্ত্রীর নামাযের অসুবিধা হোক বা না-হোক?
তিনি উত্তরে বলেন: স্বামীর (husband) জন্য রাতে স্ত্রী সহবাস করা জায়েয হবে। স্বামী স্ত্রীকে ফজরের সময় নামায পড়ার নির্দেশ দিবে। যদি স্ত্রী নামায পড়ে তাহলে তো ভাল। আর যদি না পড়ে স্বামী তার দায়িত্ব পালন করেছে।[ফাতাওয়াল বারযালি (১/২০২) থেকে সংকলিত]
সারকথা হচ্ছে- আপনার জন্য স্বামীকে (husband) সহবাস করতে বাধা দেয়া জায়েয হবে না। আপনি নামাযের জন্য তাকে জাগিয়ে দিবেন। সে যদি অবহেলা করে নামায দেরি করে পড়ে তাহলে তার গুনাহ হবে। আল্লাহই ভাল জানেন।
সূত্র: ইসলাম জিজ্ঞাসা ও জবাব